যেমন প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে বিনিয়োগের পরিমাণ। সেই সঙ্গে বীমা কোম্পানিগুলোর সম্পদ আরও স্ফীত হয়েছে। গত এক বছরে বেসরকারী জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম আয় প্রায় ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর সাধারণ বীমার প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ১০ শতাংশ। এ সময়ে জীবন বীমা খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ এবং সাধারণ বীমা খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে ১৩ শতাংশ। সম্পদ বেড়েছে জীবন বীমার ৰেত্রে ২৯ শতাংশ, আর সাধারণ বীমার ৰেত্রে ৪৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স এ্যাসোসিয়েশনের ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। মতিঝিলের চেম্বার বিল্ডিংয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এ. কে. এম. রফিকুল ইসলাম। সভায় ব্যাপক সংখ্যক বীমা কোম্পানী সমূহের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উর্ধতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সাধারণ সভায় উপস্থাপিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জীবন বীমা খাতে প্রাইভেট বীমা কোম্পানিগুলোর উপার্জিত প্রিমিয়াম আয়ের পরিমাণ ছিল ২০০৮ সালে তিন হাজার ৫৯৭ কোটি ৪৫ লাখ ২০ হাজার টাকা, যা ২০০৯ সালে চার হাজার ৫৯৫ কোটি৭৯ লাখ ২০ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। এই বৃদ্ধির পরিমাণ শতকরা ২৭.৭৫ শতাংশ। অন্যদিকে সাধারণ বীমা খাতে প্রাইভেট বীমা কোম্পানিগুলোর মোট প্রিমিয়াম আয়ের পরিমাণ ২০০৮ সালে দাঁড়ায় এক হাজার ১১৬ কোটি ৩৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা, যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০০৯ সালে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২২৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এই আয় বৃদ্ধির পরিমাণ শতকরা ১০.০৩। বেসরকারী জীবন বীমা খাতের লাইফ ফান্ড ২০০৯ সালে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫১৫ কোটি ৩৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। যা ২০০৮ সালে ছিল আট হাজার ৮৬ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। লাইফ ফান্ডের প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ৩০ শতাংশ। বেসরকারী জীবন বীমা খাতে ২০০৮ সালের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৭১৫ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ২০০৯ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৮ হাজার ৭০৫ কোটি ৩৫ লাখ ৩০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ খাতে প্রবৃদ্ধির হার ২৯.৬৪ শতাংশ। অন্যদিকে বেসরকারী সাধারণ বীমা খাতে ২০০৮ সালের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল এক হাজার ১২৭ কোটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২০০৯ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ খাতে প্রবদ্ধি হয়েছে ১৩.২১ শতাংশ। বেসরকারী খাতে জীবন বীমা কোম্পানির মোট সম্পদ ২০০৮ সালে ৯ হাজার ১৩৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০০৯ সালে ১১ হাজার ৮০২ কোটি এক লাখ ৫০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। যার প্রবৃদ্ধির হার ২৯.১৭ শতাংশ। বেসরকারী সাধারণ বীমা কোম্পানির ২০০৮ সালে সমপদের পরিমাণ দুই হাজার ২৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০০৯ সালে তিন হাজার ২৬৭ কোটি ৬৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা হয়েছে। যার বৃদ্ধির হার ৪৩.৫৯ শতাংশ। সাধারণ সভায় এ.কে.এম. রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের ইন্সু্যরেন্সের আইন এবং রম্নলস যথাযথ প্রয়োগে নতুন রেগুলেটরি অথোরিটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে এবং বীমা খাতের বিরাজমান সমস্যা সমাধান হবে। তিনি বীমা শিল্পের প্রবৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য পেশাগত দক্ষ কর্মকর্তা, আধুনিক ব্যবস্থাপনা, বিক্রয় কৌশল এবং নতুন পণ্য উদ্ভাবনের ওপর গুরম্নত্ব আরোপ করেন। বক্তব্য শেষে রফিকুল ইসলাম বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স এ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং বিদায়ী কার্যনির্বাহী পরিষদ নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদের কাছে দায়িত্বভার অর্পণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণ করে বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স এ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স এ্যাসোসিয়েশনকে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করায় অভিনন্দন জানান এবং তাঁকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করায় ধন্যবাদ জানান। তিনি বীমা খাতের বিরাজমান সমস্যা সমাধানের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স এ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত ভাইস-চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে জীবন বীমা ব্যবসা দ্রম্নতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এ খাতের সমস্যাসমূহ গুরম্নত্ব সহকারে সমাধান করা উচিত। সভায় বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স এ্যাসোসিয়েশনের বিদায়ী ভাইস-চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহমেদ, গ্রীন ডেল্টা ইন্সু্যরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির এ. চৌধুরী, পূরবী জেনারেল ইন্সু্যরেন্সের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্সু্যরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
source
কিছু বলতে চাইলে এখানে ক্লিক করে লিখুন